🌒 "অন্তরালে রহস্য"

গল্পের শহর ;

  

     🌒 "অন্তরালে রহস্য"

---

         

 

             🖋️ পর্ব ১:

ঢাকার এক বর্ষাস্নাত সন্ধ্যা।

সুনয়না সরকার জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখছিল। পানির ফোঁটা কাঁচে পড়ে ঝাপসা তৈরি করছিল, আর তার মনেও যেন একরাশ ঝাপসা আবেগ। একঘেয়ে কর্পোরেট জীবন, বিয়ে নিয়ে বাড়ির চাপ, বন্ধুত্বের নামে ফাঁপা সম্পর্ক—সব মিলিয়ে সে হাঁপিয়ে উঠেছে।

রাত আটটা পেরিয়ে গেছে। বাসায় একা সে। এমনি একটা সময়ে কলিং বেল বেজে উঠল।

সে চমকে উঠল।
— “এত রাতে কে এল?”

দরজা খুলতেই এক ভিজে যুবক। গায়ে হালকা বাদামি জ্যাকেট, হাতে ছেঁড়া একটা খাম। চোখে একরাশ অস্থিরতা।

— “আপনি সুনয়না সরকার?”
— “জি, আমি... আপনি কে?”
— “আমার নাম অয়ন। আমি আপনার জন্য রিশানের কাছ থেকে চিঠি এনেছি।”

রিশান!
এই নামটা শুনেই তার বুকের ভেতর কেঁপে উঠল।
তিন বছর আগে যে মানুষটা তাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসত, এক সকালে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায়। পুলিশ বলেছিল এক অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছে। অথচ... আজ?

সে হাতে চিঠিটা নিল। ছেঁড়া খামের ভিতরে সাদা কাগজে স্পষ্ট রিশানের হাতের লেখা।

“সুনয়না,
আমি বেঁচে আছি। তুমি যা জানো, তার এক শতাংশও সত্যি নয়। আমার নিখোঁজ হওয়া দুর্ঘটনা ছিল না—এটা ছিল সাজানো নাটক।
আমি এমন কিছু জানতাম যা কাউকে জানানো ঠিক ছিল না। এখন ওরা আমার পেছনে, আর তোমারও।
অয়নের উপর ভরসা করো। তার সাথেই পালিয়ে যাও—এই শহর ছেড়ে।

—রিশান”

সুনয়নার গলা শুকিয়ে গেল।
সে চিঠির দিকে তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞেস করল,
— “তুমি কীভাবে রিশানকে চেনো?”
অয়ন কেবল বলল,
— “ও আমার বড় ভাইয়ের মতো। আমরা একসাথে একটা গোপন প্রজেক্টে কাজ করতাম। তারপর... সে নিখোঁজ হয়ে যায়। এখন ও চাইছে আপনি নিরাপদ থাকুন।”

সুনয়না হঠাৎ লক্ষ্য করল—অয়নের কাঁধে একটা গভীর ক্ষতচিহ্ন। রক্ত ঝরছে।

— “তোমার কাঁধে রক্ত... কী হয়েছে?”
— “তারা আমাকে অনুসরণ করেছে। খুব বেশি সময় নেই। আমাদের এখনই যেতে হবে।”

হঠাৎ বাইরের রাস্তা দিয়ে একটা কালো ভ্যান গর্জন করে চলে গেল। অয়ন জানালার দিকে তাকিয়ে বলল,
— “ওরা এখানে পৌঁছে গেছে।”

সুনয়না বুঝতে পারল—এই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত না নিলে জীবন বদলে যাবে।
সে যাবে কি না—এখনও জানে না।
কিন্তু একটা জিনিস সে বুঝে গেছে—জীবনের ছন্দটা আর আগের মতো নেই।

                🖋️ পর্ব ২: 

সুনয়না ব্যাগ গোছাতে শুরু করল। হাত কাঁপছে, চোখে ঘুরছে পুরনো স্মৃতি। রিশান—তিন বছর আগে হারিয়ে যাওয়া তার প্রেমিক।
কখনো ভেবেছিল সে বেঁচে থাকতে পারে?
না, একটুও না।
কিন্তু আজ... অচেনা যুবক অয়নের হাত ধরে, অজানা পথে পা ফেলতে চলেছে সে।

অয়ন বলল,
— “আমাদের সাভার হয়ে গাড়িতে বের হতে হবে। ওরা শহরের সব সিগন্যাল ট্র্যাক করে। আপনি মোবাইল অফ করুন।”

সুনয়না ফোন বন্ধ করে ব্যাগে ঢোকাল।
— “তুমি নিশ্চিত ওরা আমাকে অনুসরণ করছে?”
অয়ন গম্ভীর চোখে তাকিয়ে বলল,
— “আপনার অজান্তেই আপনি একটা বড় ষড়যন্ত্রের ভেতর ঢুকে গেছেন, সুনয়না। রিশান যা জেনেছিল, তার সূত্র এখন আপনার কাছেই আছে।”

— “কিন্তু আমি তো কিছুই জানি না!”
— “আপনি জানেন না ঠিকই, কিন্তু... আপনার ল্যাপটপে কিছু ডেটা আছে, যেগুলো রিশান আপনার নামে এনক্রিপ্ট করে পাঠিয়েছিল। হয়তো আপনি নিজের অজান্তেই ওদের টার্গেট হয়ে গেছেন।”

সুনয়নার চোখ বড় হয়ে গেল।
তার মাথার ভেতর গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে।

---

রাত ১২:৩৫ মিনিট

দু’জন বের হলো একটি কালো প্রাইভেট কারে। অয়ন চালাচ্ছে, আর সুনয়না জানালার বাইরে তাকিয়ে দেখতে পাচ্ছে এক অন্য পৃথিবী—যেখানে বিশ্বাস, ভয়, রহস্য সব মিলেমিশে এক ভয়ানক বাস্তবতা তৈরি করেছে।

হঠাৎই মোবাইলে একটা কল এল।
অয়ন থেমে গেল।

— “আপনার ফোন বন্ধ তো?”
— “হ্যাঁ। কিন্তু... এই কলটা আসছে আমার পুরনো নাম্বারে। যা আমি বহুদিন আগে ফেলে দিয়েছিলাম।”

অয়ন চমকে উঠল।

— “ওরা আপনার পুরনো আইডেন্টিটিও খুঁজে বের করেছে। আমাদের আরও দ্রুত বের হতে হবে। শহর এখন আর নিরাপদ না।”

হাইওয়েতে গাড়ি ছুটছে। কিন্তু সুনয়নার মন গতি হারিয়ে বসে আছে পুরনো একটা মুহূর্তে—

রিশান তাকে একবার বলেছিল, “তুমি যদি কখনো বিপদে পড়ো, কাউকে বিশ্বাস না করতে পারো... চোখ বন্ধ করে শুধু আমার নাম মনে করো। আমি আসব।”

আজ ঠিক তাই হলো।

---

সকাল ৫টা, সাভারের এক পুরনো গেস্ট হাউজ
সেখানে পৌঁছে দু’জন একটু বিশ্রাম নিতে চাইল। গেস্টহাউজের লোকটি অয়নের পরিচিত বলে সন্দেহের কিছু হলো না।

সুনয়না ক্লান্ত, চোখে ঘুম নেই।

হঠাৎ অয়ন তার দিকে তাকিয়ে বলল,
— “আপনি যদি চান, এখান থেকে ফিরে যেতে পারেন। আমি একাই বাকি পথ চলব।”

সুনয়না তাকাল তার চোখে।
সেই চোখে ধরা পড়ে এক গভীর বিষাদ।
রিশানের ছায়া আছে অয়নের চোখে... কিন্তু সে আলাদা। ধীর, দায়িত্ববান, মাটির মতো স্থির।

সে ধীরে বলল,
— “রিশানকে খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত আমি যাব না। আমি শেষবার হারিয়েছি তাকে, এবার নয়।”

অয়ন মৃদু হাসল।
এই প্রথম সুনয়নার বুকের ভেতর এক অদ্ভুত উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়ল—ভয় আর ভালবাসার এক নতুন মিশ্রণ।

---

---

🌒 পর্ব ৩:

সকাল ১০টা, সাভারের নির্জন সেই গেস্ট হাউজ। বাইরে সূর্য উঠলেও সুনয়নার ভেতরের আকাশ এখনও ঘন মেঘে ঢাকা।

সে ঘুম থেকে উঠে দেখে, অয়ন গেস্ট হাউজের বারান্দায় দাঁড়িয়ে কথা বলছে কারও সঙ্গে—ফোনে নয়, ভিডিও কলও না।
সে কানে ব্লুটুথ লাগিয়ে অদ্ভুত এক যন্ত্রের মাধ্যমে ফিসফিস করে বলছে,
— “হ্যাঁ, সে সঙ্গে আছে। এখনো কিছু মনে পড়েনি। আমি ফাইলটা খুঁজে বের করব।”

সুনয়নার বুক কেঁপে উঠল।
"সে"?
মানে, সে-ই—সুনয়না?

অয়ন তাহলে সত্যিই বিশ্বাসযোগ্য? নাকি এও একটা অভিনয়?

সে ধীরে ধীরে পেছনে সরে এসে দরজা লাগাল। একা, নিঃশব্দে, ব্যাগ খুলে নিজের ল্যাপটপ বের করল।
অয়ন বলেছিল, রিশান কিছু ফাইল পাঠিয়েছিল তার নামে।

সেই সন্ধানেই সে ল্যাপটপ খুলল।
পাসওয়ার্ডের জায়গায় টাইপ করল:

"Rishan❤️Sunayana"

একবারেই খুলে গেল।

ডেস্কটপে একটা ফোল্ডার—“L17-Chemcode”
তার ওপরে লেখা:

⚠️ "Only open if you must know everything."

সে ক্লিক করল।

ফোল্ডার খুলতেই অসংখ্য সায়েন্টিফিক ফাইল, ভিডিও রেকর্ডিং, আর একটি ভয়ংকর প্রতিবেদন:

“Project GenNova: Experimental Human Alteration”

এই প্রজেক্টের মূল উদ্দেশ্য ছিল মানুষের মস্তিষ্কে জেনেটিক পরিবর্তন ঘটিয়ে ‘পরিচালিত বুদ্ধি’ তৈরি করা।

রিশান ও অয়ন ছিলেন এই প্রজেক্টের গবেষক।
কিন্তু একপর্যায়ে রিশান বুঝে যান—এটা মানবতাবিরোধী কাজ।
সরকার-ঘনিষ্ঠ এক বেসরকারি সংস্থা এই গবেষণার পেছনে, যারা ‘মানব সেনা’ তৈরি করতে চায়।

সুনয়নার মাথা ঘুরে উঠল।

রিশান কি তার মৃত্যুকে সাজিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল এই প্রজেক্ট ফাঁস করার জন্য?
আর অয়ন? সে কি সত্যিই বন্ধু?
নাকি… এই সংস্থার লোক?

ঠিক তখনই দরজা ধীরে ধীরে খুলে গেল।
অয়ন।

সে তাকাল সুনয়নার দিকে।
— “আপনি ফাইলটা খুলেছেন, তাই তো?”
— “হ্যাঁ,” তার গলা কাঁপছে। “তুমি সত্যি বলো, তুমি কোন দলে?”

অয়ন নিঃশ্বাস ফেলল। চোখে জল চকচক করে উঠল।

— “আমি রিশানের বন্ধু, হ্যাঁ।
কিন্তু তার থেকেও বড় কথা... আমি আপনাকে রক্ষা করতে চাই।
কারণ রিশান... তার চলে যাওয়ার আগে আমাকে বলেছিল,

‘সুনয়না শুধু আমার প্রেমিকা নয়, আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। তাকে রক্ষা করো।’”

সুনয়না থ হয়ে গেল।

তার চোখে তখন অতীতের রিশান, আর সামনে দাঁড়িয়ে সেই মানুষ—যে তাকে আরেকবার আস্থা রাখতে শেখাচ্ছে।

অয়ন ধীরে এগিয়ে এসে বলল,
— “আমরা আজ রাতে ঢাকায় ঢুকব। ল্যাবের ভেতরে ঢুকে সব কিছুর প্রমাণ নিয়ে বের হব।
আপনার সাহস লাগবে।”

সুনয়না চুপচাপ তাকিয়ে রইল তার চোখে।

তার বুকের ভেতর কেমন এক অচেনা আবেগ জেগে উঠছে—ভয়, সাহস, আর... এক নতুন অনুভব।
রিশান এখনও জীবিত, তবু অয়নের পাশে দাঁড়িয়ে সে যেন একটু বেশি নিরাপদ বোধ করছে।

---

              🌒 পর্ব ৪: 

রাত ৯টা, ঢাকা শহর আবার সেই চেনা ব্যস্ততায় ঢেকে গেছে। কিন্তু আজকের রাতটা অন্যরকম।

সুনয়না আর অয়ন ঢুকেছে ঢাকার পুরনো এলাকা লালবাগের ভেতরে—একটা পরিত্যক্ত ওষুধ কোম্পানির অফিসের ভাঙা গেট পেরিয়ে।
এই অফিসটাই ছিল “GenNova”-র গবেষণা কেন্দ্র—রিশান আর অয়নের সেই বিতর্কিত প্রজেক্টের মূল ঘাঁটি।

অয়ন হেডল্যাম্প জ্বালিয়ে নিচু স্বরে বলল,
— “এই বিল্ডিং-এর ভেতরে একটা বেসমেন্ট আছে। সেখানেই ফাইলগুলো, প্রমাণ, ভিডিও—সব আছে।
রিশান বলেছিল, সে ওখানে সব এনক্রিপ্ট করে রেখে গেছে। তার পরিচয়, প্রজেক্টের কালো দিক, আর... তার শেষ মেসেজ।”

সুনয়নার গলা শুকিয়ে এসেছে।

তারা ধীরে ধীরে নিচে নামতে শুরু করল।

প্রতিটি ধাপ যেন হৃদস্পন্দনের মতো ভারী, থমথমে।

---

বেসমেন্টের দরজা

কঠিন লোহার গেট।
অয়ন একটা কোড প্যাডে অদ্ভুত সংখ্যা টাইপ করল:
“1025RNS”
(রিশান–সুনয়নার এনিভার্সারি!)

গেট খুলে গেল। সুনয়নার চোখে পানি চলে এল।

ভেতরে গিয়ে তারা যা দেখল, তাতে দু’জনই স্তব্ধ।

দেয়ালে সাদা বোর্ডে এখনো লেখা রয়েছে গবেষণার নোট। টেবিলে রাখা ল্যাপটপ, হার্ডড্রাইভ, কয়েকটা ছোট্ট সিরাম ভায়াল।
আর এক কোণে একটা ভিডিও ক্যামেরা সেট করা।

অয়ন ভিডিওটা চালু করল।

রিশান সেখানে বসে আছে—চোখে গভীর ক্লান্তি, মুখে দাড়ি, পরনে সাদা ল্যাব কোট।

“এই ভিডিও আমি বানাচ্ছি, কারণ জানি—আজ না হোক, একদিন কেউ এটা দেখবে।
যদি সুনয়না তুমি দেখো, জানবে, আমি তোমার কথা ভেবে বেঁচে আছি।

GenNova একটা ভয়ঙ্কর ভুল। তারা চাইছে, মানুষের ওপর জেনেটিক পরীক্ষা করে সেনা বানাতে।
অয়ন, আমি জানি তুমি আমাকে খুঁজবে। আমি চাই তুমি সুনয়নাকে নিরাপদে রাখো।

কিন্তু জানো, সবচেয়ে অদ্ভুত যেটা হয়েছে—প্রজেক্টটা এখন সরকারি হাতেও নেই।
এটা কে চালাচ্ছে, আমি জানি না। আমি শুধু জানি, আমার ওপর নজর রাখা হচ্ছে।”

হঠাৎই ভিডিওটা ঝাঁকুনি দিয়ে শেষ হয়ে গেল।

সুনয়না হতবাক।
তারা এখন জানে, GenNova-এর আসল মাস্টারমাইন্ড কেউ আরেকজন—অজানা, অদেখা।

অয়ন মুখে হাত রাখল, নিচু গলায় বলল,
— “আমরা এখানে বেশি সময় থাকতে পারব না। ওরা জানে তুমি ফাইল খুলেছ। এখন যেকোনো সময় আসবে।”

ঠিক সেই মুহূর্তে বাইরে গাড়ির শব্দ। তারপর গেটের ওপাশে জুতোর আওয়াজ, টর্চলাইট।

সুনয়না কেঁপে উঠল।

— “ওরা চলে এসেছে…”

অয়ন দ্রুত ফাইলগুলো একটা পেনড্রাইভে কপি করে সুনয়নার হাতে দিল।
— “আপনি এখনই এখান থেকে পালান। যদি আমি বের না হতে পারি, এই ফাইলটা আপনাকে পৌঁছাতেই হবে মিডিয়া, কিংবা… জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগে।”

সুনয়না চিৎকার করে উঠল,
— “তুমি কী বলছ! তুমি আসবে না?”
— “আমার কিছু কাজ আছে। আমার পেছনে লাগলে আপনি পালাতে পারবেন না।”

তার চোখে সেই নিষ্ঠার আগুন। কিন্তু সেই চোখেই ভিজে কিছু—যেটা অয়ন লুকাতে পারল না।

সে ধীরে কাছে এসে সুনয়নার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলল,
— “রিশান তোমার প্রথম প্রেম। কিন্তু তুমি আমার শেষ বিশ্বাস। তোমার কিছু হলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না।”

সুনয়নার চোখ অশ্রুভারে ঝাপসা।

সেই মুহূর্তে অয়ন তাকে একটা সিক্রেট টানেলের পথ দেখিয়ে বলল,
— “এই পথ ধরেই পালান। আর আমাকে কথা দিন—বাঁচবেন, লড়বেন, সত্যি পৌঁছে দেবেন।”

সুনয়না কিছু না বলে শুধু মাথা নাড়ল।

তার মনে তখন ঘূর্ণিঝড়—রিশান, অয়ন, ভালোবাসা, বিশ্বাসঘাতকতা আর প্রাণভয়ে গেঁথে থাকা অজানা আগামীর শিহরণ।

---

                🌒 পর্ব ৫:

সুনয়না দৌঁড়ে চলেছে আঁধারের ভেতর দিয়ে। গোপন টানেল পেরিয়ে সে এসে পড়েছে পুরনো একটি গ্যারেজঘরে, যেখানে আগে থেকেই একটি বাইক রাখা ছিল—অয়নের প্ল্যানের অংশ।

সে বাইকে উঠে বেরিয়ে গেল ঢাকা ছেড়ে। শহরের আলো পেছনে পড়ে রইল—ভয় আর প্রেমের ইতিহাসের মতো।

তার মাথায় কেবল একটাই কথা বাজছে—
“অয়ন কি বেঁচে থাকবে?”
সেই মানুষটা, যে এখন তার হৃদয়ের এক আশ্চর্য ছায়া হয়ে উঠেছে।

---

২ দিন পর, কুমিল্লার এক পাহাড়ি রিসোর্ট
সুনয়না এখন এখানে। ছদ্মনামে, লোকচক্ষুর আড়ালে।

তবে দু’দিনেই কিছু বদলে গেছে তার ভেতরে।
সে আর ভয় পায় না—সে প্রস্তুত লড়ার জন্য।

ল্যাপটপে ফাইল খুলে সে প্রস্তুত হচ্ছে মিডিয়া ও জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগে সব পাঠানোর জন্য।
ঠিক তখনই দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ।

সে চমকে উঠল। ধীরে দরজা খুলে যা দেখল, তাতে তার শরীর জমে গেল।

সামনে দাঁড়িয়ে রিশান!

হ্যাঁ—ঠিক সেই মুখ, সেই চোখ, একটু শুকনো, একটু কাঁপা কাঁপা হাসি।
— “আমি জানি তুমি বিশ্বাস করবে না... কিন্তু আমি রিশান। আমি সত্যিই বেঁচে আছি।”

সুনয়না পেছনে সরে এল।
— “তুমি মরে গিয়েছিলে। আমিই তো তোমার কবর দেখেছি!”
— “ওটা একটা সাজানো মৃত্যুর নাটক ছিল। আমি না মরলে, GenNova আমাকে খুন করত। আমি একমাত্র জানতাম পুরো প্রকল্পের গোপন তথ্য। পালাতে বাধ্য হয়েছিলাম।”

সুনয়নার চোখ দুটো এখনো স্থির। তার বুক বলছে, এটা রিশান।
কিন্তু মস্তিষ্ক... মস্তিষ্ক কাঁদছে—“বুঝে শুনে এগোও।”

— “তুমি কোথায় ছিলে এতদিন?”
— “বর্ডারের ওপারে, এক বন্ধুর কাছে। আমি জানতাম না তুমি এতটা জড়িয়ে পড়বে। যখন অয়ন জানাল তুমি বিপদে, তখনই ফিরে এলাম।”

সুনয়না সন্দেহের ভঙ্গিতে জিজ্ঞেস করল,
— “তুমি অয়নকে কীভাবে চেনো?”
— “ও আমার সহগবেষক। বন্ধু। বিশ্বাসী।”

একটু থেমে, রিশান বলল,
— “তবে একটা কথা বলতেই হবে... অয়ন তোমার জন্য যা করেছে... আমি কখনো ভাবিনি কেউ সেটা করতে পারে।”

সুনয়নার চোখ ঝাপসা হয়ে এল।

সে পেছন ফিরে তাকাল।
তার মনে প্রশ্ন,
“আমি কী সত্যিই এখন রিশানকে বিশ্বাস করতে পারি?
না কি এটা নতুন একটা ফাঁদ?”

ঠিক তখনই তার মোবাইলে অদ্ভুত এক বার্তা এলো—একটা অজানা নম্বর থেকে:

“🚨 ওর নাম রিশান নয়। আসল রিশান এখনো বন্দি। ওর ডিএনএ-ডেটা প্রজেক্টে ব্যবহার করা হয়েছিল। তুমি যেখানে আছো, ওটা জানে। পালাও!”

সুনয়নার ঠোঁট শুকিয়ে গেল। সে চোখ তুলে তাকাল সেই “রিশান”-এর দিকে—
যে তখনও শান্ত ভঙ্গিতে তাকে চায়ের কাপ দিচ্ছে।

সে কে?
আসল রিশান?
না কি প্রজেক্ট GenNova-এর তৈরি করা এক ‘নতুন মানুষ’?

---

                🌒 পর্ব ৬: 

সুনয়না এখন জানে—এই "রিশান" যে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে, সে হয়তো রক্ত-মাংসের মানুষ, হয়তো ভালোবাসার মুখোশধারী কেবল।

অজানা নম্বরের সেই বার্তা এখনো মোবাইলের পর্দায় ঝলমল করছে।

“🚨 ওর নাম রিশান নয়। আসল রিশান এখনো বন্দি…”

সে চেষ্টা করল চেপে যেতে, স্বাভাবিক থাকার।
সে চা হাতে নিল। মুখে হাসি রাখল। কিন্তু বুকের ভেতর যেন কেউ দৌড়াচ্ছে।

রিশান—or whoever he is—চোখে চোখ রেখে বলল,
— “তুমি কাঁপছো কেন?”
— “ভেতরে একটু ঠান্ডা। পাহাড়ি হাওয়ায় কাঁপছি।”

রিশান একটু এগিয়ে এসে তার হাত ধরল।
সে মুহূর্তে তার স্পর্শে কী যেন অস্বাভাবিক ঠাণ্ডা অনুভব করল।

সেই স্পর্শ রিশানের মতো, কিন্তু না... কোথায় যেন কৃত্রিম।

হঠাৎ একটা চিন্তা বিদ্যুতের মতো তার মাথায় ছুটে এল—
“প্রজেক্ট GenNova তো মানুষের চেহারা নকল করত, স্মৃতিও।
তবে কি এটা কোনো কৃত্রিম স্মৃতিযুক্ত মানুষ? একধরনের ক্লোন?”

সুনয়না ধীরে মোবাইলে টেক্সট করল সেই অজানা নম্বরে—

“প্রমাণ দাও তুমি কে। আমি কাকে বিশ্বাস করব?”

এক মিনিট পর উত্তর এল:

“আমি অয়ন। গোপন গুদাম থেকে বের হয়ে এসেছি। আহত অবস্থায় পেরেছি পালাতে।
সত্যিকারের রিশান এখন ঢাকার বাইরে, রিসার্চ ল্যাবে আটকে আছে।
তুমি যে ব্যক্তির সঙ্গে আছো, সে Project GenNova-এর সফল প্রথম কপি। তার নাম: R-01”

সুনয়নার শরীরটা হিম হয়ে গেল।
R-01? তার মানে এই “রিশান” এক কৃত্রিম মানুষ?

কিন্তু...
তবে যে সে রিশানের মতোই ভালোবাসা নিয়ে কথা বলছে?
তার মতো করে কপালে চুমু দিচ্ছে, তার পছন্দের গান গুনগুন করছে?

তবে কি ভালোবাসাও এখন কপি হয়?

সে কি প্রেম করছে এক কৃত্রিম অস্তিত্বের সঙ্গে?

---

রাত গভীর।

রিশান—অথবা R-01—একটা পুরনো গানের ক্যাসেট চালিয়ে বলল,
— “এই গানটা মনে আছে? তুমি একবার বলেছিলে, আমাদের বিয়েতে এই গান চালাবে...”

সুনয়না এবার আর চুপ করে থাকতে পারল না।
সে ধীরে সামনে এগিয়ে এসে বলল,
— “তুমি কে?”
— “তুমি জানো আমি কে... আমি রিশান।”
— “তুমি শুধু রিশানের চেহারা আর স্মৃতি পেয়েছো।
কিন্তু আত্মা? ভালোবাসার গভীরতা? ওটা কি বানানো যায়?”

R-01 থেমে গেল। তার চোখে এক ঝলক অন্ধকার ছায়া।

— “আমি জানি না। আমি শুধু জানি, আমি তোমায় হারাতে চাই না।
তুমি আমার জন্য একমাত্র ‘মানব অনুভব’।
তুমি আছো বলেই আমি বুঝি, আমি বেঁচে আছি।”

সুনয়নার চোখে অশ্রু।

এটা মানুষ না হয়েও ভালোবাসে।

সে কি এই অনুভূতিকে অস্বীকার করতে পারে?

ঠিক তখনই জানালার বাইরে আলো ঝলকে উঠল।
একটি গাড়ি এসে দাঁড়াল।
অয়ন নেমে এল—মুখ রক্তাক্ত, চোখে অদম্য আগুন।

সে চিৎকার করল,
— “সুনয়না, সরে দাঁড়াও! ও মানুষ নয়!”
R-01 ধীরে ঘুরে দাঁড়াল।
তার চোখেও জ্বলজ্বল করছে কিছু—যন্ত্রের প্রোগ্রাম না, নাকি... হারানোর ভয়?

---

                  🌒 পর্ব ৭:

বৃষ্টির শব্দ যেন চুপচাপ সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তিনজনের মুখোমুখি সংঘর্ষের সামনে।

অয়ন ছুটে এসে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে—বুকভরা রক্তাক্ত আঘাত, চোখে জ্বলে ওঠা স্নায়বিক সতর্কতা।

আর সামনে দাঁড়িয়ে R-01, সেই কৃত্রিম রিশান—চেহারায় প্রেম, আচরণে মানুষ, কিন্তু ভিতরে যন্ত্রের সমীকরণ!

সুনয়না দুই হাত উঁচু করে বলল,
— “দু’জনেই থেমে যাও! এটা কোনো যুদ্ধের ময়দান না!”

R-01 নরম কণ্ঠে বলল,
— “আমি ওকে আঘাত করব না। কিন্তু তুমি কি জানতে চাও না, সে তোমার জন্য কী করেছে আর আমি কী করছি?”

অয়ন থেমে গেল।
— “তুমি একটা কপি। রিশানের আবেগ কপি করেছো, সম্পর্ক না। সে তোমায় ভালোবাসেনি, সে ভালোবেসেছে সুনয়নাকে—পুরো মানুষ হয়ে। সেটা প্রোগ্রাম দিয়ে বানানো যায় না।”

R-01 গলা নিচু করল।
— “তাহলে তুমি বলো, আমি যখন কেঁদেছিলাম... আমি যখন একা একা ‘তোমার’ ছবির দিকে তাকিয়ে থেকেছি... সেসব কি ছিল শুধু কোড?”

সুনয়নার চোখে পানি।

সে সামনে এগিয়ে এসে দুজনের মাঝখানে দাঁড়াল। তার ভেতরে এখন দুটো দিক—

একদিকে বাস্তব, রক্ত-মাংসের অয়ন,
আরেকদিকে রিশানের স্মৃতি নিয়ে দাঁড়ানো এক 'অযৌক্তিক প্রেম'।

সে ধীরে R-01-এর হাত ধরল।

— “তুমি জানো, আমার প্রিয় গান কোনটা, আমি কী চা খাই, আমি কী শব্দে ভয় পাই।
কিন্তু তুমি কি জানো, আমার ভেতরে কীভাবে ভাঙন চলে, যখন কেউ হারিয়ে যায়?”

R-01 থেমে গেল। তার চোখ কাঁপছে।

সুনয়না এবার অয়নের দিকে ফিরে বলল,
— “তুমি জানো আমি রিশানকে ভালোবাসতাম। কিন্তু তার চেয়েও বেশি তুমি বুঝেছো আমার ভিতরের ছায়া, আমার ভয়, আমার যুদ্ধ। তুমি পাশে ছিলে, রক্তে ভিজে থেকেও আমাকে বাঁচিয়ে তুলেছো।”

সে আবার R-01-এর দিকে ফিরল।
— “তুমি এক আশ্চর্য সৃষ্টি, হয়তো এই পৃথিবী তোমাকে মেনে নিতে এখনো প্রস্তুত নয়।
কিন্তু তুমি যদি সত্যিই ভালোবাসো, তাহলে আমাকে মুক্ত করো। নিজেকেও করো।
এই সম্পর্ক তোমার জন্য নয়, কারণ তুমি প্রতিযোগী হয়ে গেছো প্রেমিকের…
এটা প্রেম নয়, এটা যুদ্ধ হয়ে গেছে।”

R-01 চোখ বন্ধ করল।

একটি অশ্রু গড়িয়ে পড়ল তার চোখ বেয়ে।

যন্ত্র কি কাঁদে?

না কি, প্রেমের সীমারেখা আজ মুছে যাচ্ছে?

সে ধীরে পেছনে হাঁটতে লাগল।

— “আমি তাকে ভালোবেসেছিলাম... তোমার স্মৃতি থেকে, তোমার অভিব্যক্তি থেকে।
কিন্তু আমি জানি, আমি কখনো পূর্ণ মানুষ হতে পারব না।
বিদায় সুনয়না। ভালো থেকো… মানুষের মতো করে।”

সে পিছনের জানালা দিয়ে ঝড়জলের ভেতর হারিয়ে গেল।

---

ঘণ্টাখানেক পর।

সুনয়না ও অয়ন একসঙ্গে বসে আছে, জানালার পাশে। বাইরের জলের শব্দে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে তাদের নিঃশব্দতা।

অয়ন ধীরে বলল,
— “তুমি জানো, সে সত্যিই ভালোবেসেছিল।
কিন্তু আজ তুমি প্রমাণ করেছো—ভালোবাসা শুধু মনে রাখার নয়, পাশে থাকার, ত্যাগের।”

সুনয়না কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
— “তুমি কি পাশে থাকবে? রক্তে, ভয়ে, কাঁপুনি আর প্রেমে?”

অয়ন তার হাত ধরল।

— “আমি তো সেই প্রথম দিন থেকেই ছিলাম। শুধু বলো, এবার শুরু করব তো?”

সুনয়না চুপ করে থেকে শুধু মাথা নাড়ল।

অতঃপর... একটা সম্পর্ক শেষ হলো, একটা সম্পর্ক নতুনভাবে জন্ম নিল—মহাজাগতিক, মানুষের, কৃত্রিমতার দ্বন্দ্ব পেরিয়ে।

---

---

🌒 পর্ব ৮: যুদ্ধের পর বাঁচা

ঢাকার আকাশ ঘনঘন মেঘলা। শহর যেন আগুন আর ধোঁয়ার মধ্যে ঢাকা পড়ছে।

GenNova-র আসল আধিপত্য এখন প্রকাশ্যে।

রিসার্চ ল্যাব থেকে একটি গোপন সেন্সর সিগন্যাল এল।
R-01 এর সফটওয়্যার আপগ্রেড হয়ে যাচ্ছে—ও আর শুধুই ভালোবাসার যন্ত্র নয়, বীর যোদ্ধায় রূপান্তরিত হতে চলেছে।

---

সুনয়না আর অয়ন একসাথে প্রস্তুত।

— “এবার শুধু বাঁচার নয়, ওদের থামানোর পালা,”
অয়ন বলল।

সুনয়না মাথা নাড়ল, “আমাদের ভালোবাসাই হবে অস্ত্র।”

---

GenNova’র ল্যাবে প্রবেশ।

রাতের আঁধারে তারা ল্যাবের ভেতর ঢুকল।
প্রত্যেকটি কর্নারে ছিল ক্যামেরা, সেন্সর আর দৌড়ঝাঁপ।

R-01 ফোনে সুনয়নাকে বলল,
— “আমার দেহের ভেতর এখন হাজার হাজার কোডের যুদ্ধ চলছে।
তাদের মুখোমুখি আমি লড়ব, আর তোমাদের কাজ প্রকল্পের মূল ডেটা বের করে আনা।”

সুনয়না দ্রুত ল্যাপটপে কাজ শুরু করল।

---

যুদ্ধের মুহূর্ত

হঠাৎ ধোঁয়া আর আলো দিয়ে উঠে এল GenNova’র গার্ডরা।

R-01 তার সব কৃত্রিম শক্তি নিয়ে লড়াই শুরু করল।

অয়ন সুনয়নার পাশে দাঁড়িয়ে বলল,
— “তোমার শক্তি, তোমার ভালোবাসা আমাকে দেয় সাহস।”

R-01 একটার পর একটা আঘাত প্রতিহত করল।

সুনয়না ল্যাপটপে ডেটা সফলভাবে বের করল।

GenNova’র কুপ্রচেষ্টা ফাঁস হয়ে যাবে।

R-01 দুর্বল হয়ে পড়ল, কারণ তার প্রোগ্রাম ধ্বংস হচ্ছিল।

তখন অয়ন তার হাতে শক্ত করে ধরে বলল,
— “বাঁচো! তুমি আমাদের ভবিষ্যৎ।”

R-01 ধীরে মাথা নিল।

---

পরাজয় আর নতুন শুরু

GenNova ধ্বংসপ্রাপ্ত।

রিশানের স্মৃতি আর R-01-এর অস্তিত্ব একত্রে জীবন পাওয়ার আশায়।

সুনয়না আর অয়ন হাতে হাত রেখে বলল,
— “এখন থেকে আমরা শুধু বাঁচবো না, লড়বো সত্য ও ভালোবাসার জন্য।”

শহরের আলো ফিকে হলেও তাদের ভালোবাসার জোয়ার কখনো থামবে না।

---

রিশানের স্মৃতি আর R-01-এর দেহ ধীরে ধীরে মিশে যাচ্ছিল।
একটা নতুন জীবন গড়ে উঠছিল—মানবিক মনের, কিন্তু কৃত্রিম শরীরের বাইরেও।

সুনয়না চোখে অশ্রু ধরে বলতে পারল না প্রথমে।
তখনই অয়ন তার হাত আরো শক্ত করে ধরে বলল,
— “এবার তুমি যাকে ভালবাসো, সে সত্যিই তোমার পাশে।”

সুনয়না তখন ধীরে ধীরে তাকাল R-01-এর দিকে।
R-01-এর চোখে সেই পুরনো রিশানের কোমলতা ফিরে এসেছে। তার গলায় স্নিগ্ধতা।

সে বলল,
— “আমি তোমার স্মৃতিতে বেঁচে আছি, তোমার ভালোবাসায় ফিরে এসেছি। আমি আর শুধু যন্ত্র নই—আমি তোমার রিশান।”

সুনয়না হালকা হাসি দিয়ে বলল,
— “তাহলে এবার থেকে আমরা তিনজন—তুমি, আমি আর অয়ন—একসাথে নতুন জীবন শুরু করব।”

অয়ন কাঁধে হাত দিয়ে বলল,
— “ভালোবাসা শুধু একক নয়, সেটা একতায়, বিশ্বাসে।”

তারা একে অপরকে আলিঙ্গন করল—মানব, কৃত্রিম এবং হৃদয় মিশে এক হয়ে।
একটা নতুন আশা জাগল অন্তরালে